স্পর্ধা নিউজ প্রতিদিন আন্তরর্জাতিক  ডেস্ক:

ঘড়ির কাঁটা তখন বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পেরিয়ে গিয়েছে। অন্ধকারের মধ্যেই ইজরায়েলের আকাশে উড়ল দুশো ফাইটার জেট। লক্ষ্য ইরানের প্রতিরক্ষা ও পরমাণুকেন্দ্র। ঘণ্টাখানেকের অভিযান। পোশাকি নাম ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’।

তেহরান: ঘড়ির কাঁটা তখন বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পেরিয়ে গিয়েছে। অন্ধকারের মধ্যেই ইজরায়েলের আকাশে উড়ল দুশো ফাইটার জেট। লক্ষ্য ইরানের প্রতিরক্ষা ও পরমাণুকেন্দ্র। ঘণ্টাখানেকের অভিযান। পোশাকি নাম ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। কিছুক্ষণ পরেই জানা গেল, ইরানের অন্তত আটটি জায়গায় আছড়ে পড়েছে ইজরায়েলি সেনার ক্ষেপণাস্ত্র। মূল টার্গেট ইরানের সবচেয়ে বড় ইউরেনিয়াম পরিশোধন কেন্দ্র নাতনাজ। তালিকায় রয়েছে তাবরিজ সহ আরও কয়েকটি পরমাণু ও সেনার প্রধান ঘাঁটি। উপসাগরীয় যুদ্ধের পর এত বড় হামলা ইরানে আর হয়নি। বেলা বাড়তেই জানা যায়, শুধু পরিকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি নয়, ইজরায়েলের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ইরানের সেনা সর্বাধিনায়ক বা চিফ অব স্টাফ জেনারেল মহম্মদ বাঘেরিও। মারা গিয়েছেন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পের (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার জেনারেল হোসেন সালামি, এয়ার ফোর্সের কমান্ডার আমির আলি হাজিজাদেহ সহ কয়েকজন শীর্ষ কর্তা। এমনকী ছ’জন পরমাণু বিজ্ঞানীরও মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ইরানের অ্যাটমিক এনার্জি অর্গানাইজেশনের প্রাক্তন প্রধান ফেরেউদুন আব্বাসি। পাল্টা ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’ শুরু করেছে তেহরান। একাধিক স্থান লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে তারা।
বাঘেরি ছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের কাছের লোক। ইজরায়েলি হানার জবাবে খামেনেইয়ের হুঁশিয়ারি—‘এর পরিণাম হবে ভয়ঙ্কর। চরম শাস্তি পেতে হবে।’ সেইমতো শুক্রবার সকাল থেকে শতাধিক ড্রোন হামলা চালায় তেহরান। সেগুলিকে মাঝ আকাশেই ধ্বংস করেছে ইজরায়েলের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। যদিও রাতে ফের ১৫০টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। জনবসতি এলাকা লক্ষ্য করেই ওই হামলা বলে জানিয়েছে ইজরায়েল। সূত্রের খবর, রাতে তেল আভিভে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। গোটা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে। দু’পক্ষকেই সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশংসা করেছেন ইজরায়েলের হামলার।

এদিন ইরানের মোট ১০০ জায়গাকে টার্গেট করেছিল তেল আভিভ। সূত্রের খবর, ইরানের বিভিন্ন জায়গায় গোপনে বিস্ফোরক ঠাসা একাধিক ড্রোন মজুত করেছিল ‘মোসাদ’। এদিন সেগুলিকে ‘অ্যাক্টিভেট’ করা হয়। টার্গেট ছিল তেহরানের কাছে সেনাঘাঁটির মিসাইল লঞ্চারগুলি। নিখুঁত হামলা চালাতে গাড়ির মধ্যে লুকিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র এবং সেটির ‘স্ট্রাইক সিস্টেম’ মধ্য ইরানে পাচার করেছিল ইজরায়েল। হামলার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি ইরানের এয়ার ডিফেন্সে আঘাত হানে। রাতেও একদফা হামলা চালায়  ইজরায়েল। দীর্ঘদিন ধরে তাদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক মহলকে অন্ধকারে রেখে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে চলেছে। এদিন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে হামলা।
এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি। তারা জানিয়েছে, নাতনাজ সহ অন্য পরমাণুকেন্দ্র থেকে তেজস্ক্রিয়তা ছড়াচ্ছে কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। যদিও নেতানিয়াহুর দাবি উড়িয়ে দিয়েছে ইরান। জানিয়েছে, জনবসতি লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলি সেনা। শুক্রবারের নামাজের পর ইরানের কোম শহরে ঐতিহ্যবাহী জামকারান মসজিদের চূড়ায় লাল পতাকা ওড়ানো হয়েছে। কোনও দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সময় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তারপরই ১০০-রও বেশি ইরানি ড্রোন হামলা চালায় ইজরায়েলের দিকে। তেহরান জানিয়েছে, এই পাল্টা আক্রমণে অন্তত ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইজরায়েল সেকথা স্বীকার করেনি। রাতে ফের দু’পক্ষ একে অন্যের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনায় বসবে না ইরান

পরমানু বিষয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা এখন ভিত্তিহীন। ইরানের ওপর ইজরায়েলের হামলার পর একথা ইরানের পক্ষ থেকে। খামেনি প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরাসরি এই সমারিক সংঘাত নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকের নিশানা করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে মার্কিন মদতেই ইরানে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল সেনা।
ইরানের সংবাদমাধ্যমের কাছে সেই দেশের বিদেশ মন্ত্রী বলেছেন, ইজরায়েলকে যুদ্ধে মদত দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেই ভূমিকা পালন করছে এই পরিস্থিতিতে তাদের সাথে কোন আলোচনায় বসা ভিত্তিহীন। তবে ইরানের এই দাবি নাকচ করেছে আমেরিকা। তাদের দাবি তারা ইজরায়েলকে কোন মদত দিচ্ছে না এই সামরিক সংঘাতে। রাষ্ট্রসঙ্ঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে তারা পরমাণু বিষয় ইরানের সাথে বৈঠকে বসতে তৈরি। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এক্সহ্যান্ডেলে দাবি করেছেন যে তার প্রশাসনকে ইরানকে দুমাস সময় দিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পরমাণু চুক্তি করার, কিন্তু ইরানের পক্ষ থেকে কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। রবিবার ম্যাস্কটে ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা পরমানু বিষয়। কিন্তু বর্তমানে যেই পরিস্থিতি তাতে সেই বৈঠক হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
গতকাল রাতে ইজরায়েলের ভুখন্ডে একের পর এক হামলা চালিয়েছে ইরান। মিসাইলের সাথে চলেছে ড্রোন হামলাও। ইরানের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা এক ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে যে তাদের ক্ষেপনাস্ত্র ইজরায়েলের সামরিক হেড কোয়াটারে আঘাত এনেছে। ইরানের পক্ষ থেকে যে ইজরায়েলের একাধিক জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে তা নিশ্চিত করা হয়েছে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান কর্ণেল শোশানি এক্সহ্যান্ডেলে দাবি করেছেন এশিয়া মহাদেশে যেই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে তার জন্য ইরান দায়ী।
খামেনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে ইরানের ভুখন্ডে আক্রমণের ফলে ইজরায়েলকে কড়া প্রত্যুত্তরের মুখে পড়তে হবে। তিনি দাবি করেছেন গোটা দেশ ইরানের সেনার পাশে আছে।

ছবিতে যে ভবনটিতে ধোঁয়া ও বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে, সেটি তেল আবিব শহরের কিরিয়া (Kirya) সামরিক কমপ্লেক্স-এর অংশ, যা ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও আইডিএফ (ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সেস) সদর দপ্তরের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

এই এলাকাটি তেল আবিব শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং একে অনেক সময় “ইসরাইলের পেন্টাগন” বলা হয়।

ইরানের ভুখণ্ডে ইজরায়েলের হামলা ইজরায়েল যে অন্যের পক্ষে ক্ষতিকর রাষ্ট্র এই হামলায় তা প্রমাণ করল ফের। আন্তর্জাতিক আইন এবং রীতি ভেঙে নিজেদের ইচ্ছে মতো পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির ওপর হামলা চালায় ইজরায়েল।’
ইজরায়েল ইরানের ওপর পরপর হামলা চালাচ্ছে। ইরানের শীর্ষস্তরে সেনা আধিকারিক, একাধিক পরমাণু বিজ্ঞানী এবং বহু সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ইজরায়েলের বিবৃতিতে স্পষ্ট যে দীর্ঘ পরিকল্পনার পর এই হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলা থেকে স্পষ্ট হয় যে গোটা পশ্চিম এশিয়ায় ইজরায়েল নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতে চায়।
বেশীর ভাগ মানুষ এই হামলার জন্য সরাসরি মার্কিন মদতকে নিশানা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, প্রত্যক্ষ বা গোপন মদত ছাড়া ইজরায়েলের পক্ষ থেকে এই হামলা চালানো সম্ভব নয়।
গোটা বিশ্বের কাছে বিষয়টি অজানা নয় যে ইজরায়েল পরমাণু শক্তিধর একটি দেশ। তারা চায় না পশ্চিম এশিয়ার অন্য কোন দেশ পরমাণু গবেষণায়, অসামরিক প্রয়োজনে হলেও, প্রযুক্তিগত উন্নতি করুক। ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। তার মধ্যে দুই পড়শি দেশের সংঘাত পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিরতাকে গভীরতর করল। দীর্ঘ ২০ মাস ধরে প্যালেস্তাইনে লাগাতার গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল। এখন ইরানের ওপর এই হামলায় পরিষ্কার যে গোটা অঞ্চলে তাদের আধিপত্য বিস্তারে কোন বাধা রাখতে চায় না ইজরায়েল।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের হস্তক্ষেপ দাবী হয়েছে। বিশেষজ্ঞ মহল বলছেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের উচিত দ্রুততার সঙ্গে ইজরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া। পাশাপাশি সকলের উচিত আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইজরায়েলের এই আক্রমণ এবং সামরিক অভিযান বন্ধের দাবিতে সরব হওয়া। যুদ্ধ পরিস্থিতি যাতে থামানো যায় সেই বিষয়ও পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসঙ্ঘে প্যালেস্তাইনে আগ্রাসন বন্ধের প্রস্তাবের ওপর ভোট হয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে। ভোটদানে বিরত ছিল ভারত। ভারতের এই ভূমিকা ইজরায়েলকে মদত জোগাচ্ছে। ভারতের সাথে প্যালেস্তাইন এবং ইরানের দীর্ঘ কুটনৈতিক সম্পর্ক আছে। সেই সম্পর্ক আরও মজবুত এবং শক্তিশালী করা প্রয়োজন। ভারত সরকারের উচিত ইজরায়েলের প্রতি সব পরোক্ষ সমর্থন বন্ধ করা। উচিত পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ও ন্যায় ফিরিয়ে আনার পক্ষে সরব হওয়া

ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে ইজরায়েলি হানা, নিহত সেনাপ্রধান, পরমাণু বিজ্ঞানীও, পাল্টা হামলা তেহরানের

ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে ইজরায়েলি হানা, নিহত সেনাপ্রধান, পরমাণু বিজ্ঞানীও, পাল্টা হামলা তেহরানের

ঘড়ির কাঁটা তখন বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পেরিয়ে গিয়েছে। অন্ধকারের মধ্যেই ইজরায়েলের আকাশে উড়ল দুশো ফাইটার জেট। লক্ষ্য ইরানের প্রতিরক্ষা ও পরমাণুকেন্দ্র। ঘণ্টাখানেকের অভিযান। পোশাকি নাম ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’।

তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষয়ক্ষতি ও বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা শুক্রবার রাতে চরমে পৌঁছায়। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন শহর, বিশেষ করে তেল আবিব লক্ষ্য করে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।

ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের বেশ কিছু তেল আবিব ও আশপাশের এলাকায় আঘাত হানে। শহরের আকাশে বিস্ফোরণের আলো ও ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। বিস্ফোরণের শব্দে পুরো শহর কেঁপে ওঠে এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

তেল আবিব ও আশপাশের এলাকায় বহু ভবন ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। কিছু ভবন আংশিক বা সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষ আটকা পড়ার খবরও পাওয়া গেছে।

উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালান এবং আহতদের হাসপাতালে পাঠান।

ইরানের পাল্টা হামলার আশঙ্কায় তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Ben Gurion International Airport) অনির্দিষ্টকালের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিমানবন্দরের সব ফ্লাইট বাতিল এবং আগত-প্রস্থানকারী সব যাত্রী পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে।

ইসরায়েলের তিনটি প্রধান এয়ারলাইন্স তাদের সব বিমান দেশ থেকে সরিয়ে নিয়েছে, যাতে বিমানবন্দরে হামলার আশঙ্কায় কোনো বিমান ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কবে নাগাদ বিমানবন্দর পুনরায় খুলবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। যাত্রীদের বিমানবন্দরে না আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে এবং পুনরায় চালু হওয়ার বিষয়ে কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা আগে জানানো হবে।

ইসরায়েল ছাড়াও ইরান, ইরাক, জর্ডান ও সিরিয়া তাদের আকাশসীমা বন্ধ রেখেছে, ফলে শত শত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল বা অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিমানবন্দরে কোনো বড় ধরনের অবকাঠামোগত ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে নিরাপত্তার স্বার্থে বিমানবন্দর পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে।

বিস্ফোরণের শব্দ ও আতঙ্কে তেল আবিবের বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যান।

বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় ইসরায়েল কার্যত আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অনেক বিদেশি এয়ারলাইন্সও তাদের ফ্লাইট বাতিল করেছে।

এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ও মধ্যপ্রাচ্যের আকাশপথে চলাচলকারী সব যাত্রী এবং এয়ারলাইন্সকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে তেল আবিব ও আশপাশের এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, প্রাণহানিও ঘটেছে। নিরাপত্তার কারণে বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে, এবং ইসরায়েল কার্যত আন্তর্জাতিক বিমান যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বিমানবন্দর ও আকাশপথ বন্ধ থাকবে এমনটাই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।