স্পর্ধা নিউজ প্রতিদিন।। বিশেষ প্রতিবেদন ।।
গত ২ সপ্তাহ উত্তাল সংঘর্ষ, রক্তপাত, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা আর পারমাণবিক বোমার গর্জনের পর অবশেষে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির ইংগিত। ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি কার্যকরী করা হয়েছে।
যদিও এই বিষয়টি নিয়ে এখনো প্রচন্ডভাবে সন্দেহ রয়েছে এই যুদ্ধ বিরতি আসলে কতদিন চলবে? ইতিহাস থেকে শিক্ষা পাওয়া যায় যে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইজরায়েল যখন যুদ্ধ বিরতি করে তারা যুদ্ধ থামানোর জন্য করে না। যখনি নিজেদের রিলোড করার প্রয়োজন হয় বা কোন্ঠাসা হয় তখনই তারা যুদ্ধ বিরতি করে। মুলত পরবর্তী সময় আরও শক্তি নিয়ে তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ইরানের ক্ষেত্রেও কিন্তু এটা ব্যতিক্রম নয়। অনেকেই কিন্তু ধারণা করছেন যে যুদ্ধ বিরতি আপাতত কার্যকর হলেও সেটা আবার সংঘর্ষে রূপ নেবে।
কেন এই যুদ্ধ বিরতি টেকসই হবেনা? আবার যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এর কারণ হলো, মৌলিক যে চাওয়া পাওয়া সেই যায়গায় কোন সুরাহা হয়নি।
ইজরায়েলের একান্ত ভাবে মৌলিক চাওয়া ছিল যে ইরানের কোন পরমানু কর্মসূচি থাকবেনা। যাতে পরমানু অস্ত্রের অধিকারী সে নাহতে পারে। এক্ষেত্রে কিন্তু কোন আপোষ হয়নি। সে ইস্যুটাকে কেন্দ করে ইরানের বিরুদ্ধে হামলা এবং ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এই পরমাণু ইস্যু তার কোনও সমাধান হয়নি। বরং যুক্তরাষ্ট্র নিজে শিকার করে নিয়েছে যে ৪৫০ কেজি পরিশোধিত ইউরেনিয়াম ছিল তার কোন হদিস পাওয়া যায়নি এবং ইরানের যে পরমাণু স্থাপনাগুলো রয়েছে সেখানে আক্রমণ করে গুড়িয়ে দেওয়ার পরও সেখান থেকে কোনো রেডিয়েশন লিক হয়নি। এটা আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এবং যুক্তরাষ্ট্রও শিকার করেছে।
মৌলিক বিষয় নিয়ে কেউই এখনো আপোষ করেনি, ইরানের কর্মসূচি মেনে নেয়নি ইজরায়েল আবার ইরান ত্যাগ করবে এমনটাও মেনে নেয়নি। আবার যুক্তরাষ্ট্র ছাড় দেবে এমন্টাও বলেনি। আর সার্বিক বিষয়কে কেন্দ্র করে বলছেন যে যুদ্ধের দ্বিতীয় ধাপে রিলোড চলছে। কথিত ভাবে যখন যুদ্ধ বিরতি চলছে ঠিক এমতাবস্থায় নতুন আরও একটি যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। আর সেটা হলো প্রচারণার যুদ্ধ। কারণ গত এগারো দিনের যুদ্ধে যে তিনটি পার্টি অংশগ্রহণ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান এবং ইজরায়েল। যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হওয়ার সাথেই তিনটি দেশই নিজেকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেছে। পরবর্তী আলোচনায় আসুন বুঝতে চেষ্টা করি, এই ১১ দিনের যুদ্ধে কে কি অর্জন করলো? এবং কার কতবড় ক্ষতি হলো।
(চলবে)
হাফিজ সরকার
সাবেক ছাত্রনেতা
লেখক ও কলামিস্ট