যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের লাভ কি ?
বাঘ শিকারে ছাগলকে টোপ নয়তো ?
চলতি বছর তিনটি যৌথ সামরিক মহড়া চালাবে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্ত্রাস্ট্র । এই প্রচেস্টা বাংলাদেশ-যুক্ত্রাস্ট্র এবং এই অঞ্চলকে আরও দৃঢ় শক্তিশালী ও নিরাপদ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্পর্ধা নিউজ প্রতিদিন।। বিশেষ প্রতিবেদন।।
আজ শুরু হলো বাংলাদেশ –যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়া যখন রাখাইন করিডোর নিয়ে একটা কথা বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে তাই এই মহড়ার গ্রীষ্মকালীন সময়সূচি বেশ কৌতুহলউদ্দীপক।
কাকতালীয় ভাবে, বাংলাদেশের একটা স্কুলের উপর একটি চীনা ফাইটার প্রশিক্ষণ বিমান ভেঙে পড়ে শিশু মৃত্যুর কারণ হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে এই সামরিক মহড়া শুরু হচ্ছে যদিও এর সময়সূচি পূর্বেই নির্ধারিত ছিল। সাম্প্রতিক সামরিক বিমান দূর্ঘটনা বাংলাদেশের বিমান বাহিনীর দূর্বলতাকে ফুটিয়ে তুলেছে।
বিশেষ করে আমাদের প্রতিরক্ষা বাজেট তেমন পর্যাপ্ত না হওয়ায় আমাদের যুদ্ধবহর সীমিত।
বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সক্ষমতা সে–তুলনায় বেশ ভালো। দেশে – বিদেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর সাথে সম্পর্কীত হওয়ায় সেনাবাহিনীর আধুনিক সরঞ্জামের সাথে পরিচয় আছে। অন্য দিকে, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নৌবাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সাথে কাজ করে কিছুটা আধুনিকতার ছোঁয়ায় আছে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যৌথ বা দ্বিপাক্ষিক সামরিক মহড়া করে থাকে। এটা রেওয়াজ। এই রেওয়াজের অন্তর্নিহিত অর্থ হলো নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া এবং শক্রজোটকে হুশিয়ার করা।
প্যাসিফিকে যুক্তরাষ্ট্রের চিহ্নিত শত্রু হলো, চীন। সাউথ চায়না বা মিয়ানমারের বেল্ট এন্ড রোড প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের টার্গেট চীন। এই চীনবিরোধী জোটে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতও রয়েছে। বাংলাদেশ চীন থেকে একটা সাবমেরিন কেনায় ভারত বাংলাদেশের গত সরকারের উপর বেশ নাখোশ ছিল। কারণ এতে চীনা প্রযুক্তিতে গোয়েন্দাগিরির একটা অভিযোগ তারা করেছিল। গত সরকারের পতনের পর ভারতও বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রান্তস্থ হয়ে পড়েছে। এখন রাজনীতি ও সরকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব অনেকটা একক। তাই, দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত মানবিক করিডোর, টেকনাফে বিমানঘাঁটি বা আরাকান আর্মির সাথে যৌথভাবে কাজ করতে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছে এবং তাতে অনেকের সায়ও আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জানাচ্ছে, এই যৌথ মহড়া দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন ও মানবিক সহায়তাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আমি সামরিক বিশেষজ্ঞ নই, তবে ভূরাজনৈতিক কৌশল বিশ্লেষণ করে বলা যায় বাংলাদেশ এখন ভারত–চীনের বলয়ের বাইরে, এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে। সামরিক মহড়া এটাকে আরও সুদৃঢ় করবে। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে পা রেখে প্যাসিফিকে চোখ রাখবে। চীনারা বুদ্ধিমান, আগ বাড়িয়ে কিছু বলে না তবে তারা চোখ রাখছে, ভারতও চোখ রাখবে।
যাইহোক, পাকা বাঘ– শিকারীরা বাঘকে টার্গেটে আনার জন্য ছাগলকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে। বাঘ না মরলেও ছাগলের মৃত্যু নিশ্চিত হয়। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের টোপ কীনা – ভবিষ্যৎই বলতে পারবে। তবে তার নমুনা দেখা দিচ্ছে।