স্পর্ধা নিউজ প্রতিদিন।। বিশেষ প্রতিবেদন।।
‘নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গায়ে
প্রেমের কি স্বাদ আছে বলো'!?
‘বিধিরে তুই আমায় ছাড়া রঙ করার মানুষ দেখলিনা
আমার বুকটা ভরে তৃষ্ণা দিলি
সেই পিয়াসা মিটায় এমন মানুষ দিলিনা’
‘ও নদীরে তোর কোন কি ব্যথার দোসর নাই‘
‘তোমরা ভুলে গেছ মল্লিকাদির নাম’
“আগুনে যার ঘর পুড়েছে
সিঁদুর রাঙ্গা মেঘ দেখে তার ভয়”
“ও পাখি রে --------
আয় দেখে যা কেমন আছি
একবার আয় দেখেযা কেমন আছি |”
‘এই পদ্মা এই মেঘনা’
নিন্দার কাঁটা তিনি কতটা সয়েছেন তা জানি না, তবে হীম-নিঃসঙ্গতায় গভীর বিরহের স্বাদ নিশ্চয়ই জীবনের অনেকটা সময় ধরে উদযাপন করেছিলেন।
অকৃত্রিম সুন্দর ও শুদ্ধতার সাধক ছিলেন কবি,গীতিকার, সুরকার কণ্ঠশিল্পী ও শিক্ষক আবু জাফর। তাঁর রচিত দেশাত্মবোধক ও আধুনিক গানগুলো একসময় তুমুল আলোড়ন তুলেছিল।
‘এই পদ্মা এই মেঘনা'
গানটি বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি গানের মধ্যে স্থান করে নিয়েছিল। বেতার এবং টেলিভিশনের নিয়মিত সংগীতশিল্পী ও গীতিকার ছিলেন আবু জাফর। স্ত্রী ফরিদা পারভীনের সাথেও বেশকিছু ডুয়েট গান গেয়েছিলেন। ফরিদা পারভীনের গাওয়া অধিকাংশ আধুনিক গানই ছিলো তাঁর লেখা ও সুর করা।
হঠাৎ সব ছেড়ে পরিপূর্ণ ইসলামি জীবন দর্শনকে আঁকড়ে ধরলেন আবু জাফর স্যার। অন্যদিকে নিজের হাতে তিল তিল করে গড়ে তোলা প্রিয়তমা স্ত্রী, জীবন সংসার ও সংগ্রামের একমাত্র বিশ্বস্ত সঙ্গী সুর-সম্রাজ্ঞী ফরিদা পারভীন। যার হৃদয় লালন শাঁইজির ভাব ও ভক্তিপূর্ণ সুরের সরাবে ডুবে গভীর নিমগ্নতারধ্যানে ছিলো বিভোর। ঘর সংসার স্বামী কিছুতে, কোনো পিছুটানেই তিনি সুরহারা হতে চান নি!
অতঃপর জীবনের মাঝপথে এসে দুজন দু'জনের মাঝে আদর্শের দেয়াল তুলে নিরবে দু-পথে হেঁটে গেছেন দু'দিকে! বাকী জীবনে ফরিদা পারভীন তাঁর সমমনা জীবন সঙ্গী খুঁজে নিলেও, আবু জাফর স্যার তা করেনি।
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর তিনি পৃথিবী ত্যাগ করলেন। কয়েকমাসের ব্যবধানে ফরিদা পারভীনও চলে গেছেন।
তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করি।
মানুষের জীবন এক অসমাপ্ত দীর্ঘশ্বাস-
কেননা কোনো প্রাপ্তিই মানুষের জীবনকে পরিপূর্ণতা দেয় না!
সংগ্রহ ও সম্পাদনা :
হাফিজ সরকার
তথ্যসূত্র:
কাজী মোহিনী ইসলাম